ফেরদৌস জয়;
মালঞ্চ,মাধবী, মালা বা জুঁই ফুল, তেরছি, হাজারবুটি, ছিডা—কত–কী নামের বাহার! পাড় আর জমিনে সুতার চোখজুড়ানো কারুকাজ।
দেখলেই মন ভরে যায়। এই হলো শাড়িপ্রেমী ঐনিতা রৌদিহার অতি আদরের জামদানি শাড়ির প্রতিষ্ঠান ঐনিতান’স কালেকশনের সংগ্রহের শাড়ি।
ঐনিতা কালেকশনের প্রতিষ্ঠাতা ঐনিতা রৌহিদা জানান,ঢাকার অদূরে শীতলক্ষ্যার পূর্ব তীরের নোয়াপাড়া, রূপসী, মৈকুলী, খাদুন, পবনকুল, মুরগাকুল, বরাব এসব গ্রামের তাঁতিদের হাতে তৈরি হয় জামদানি।সেখান থেকে’ই আমার জামদানি শাড়ি আনা শুরু। এই শাড়িকে বিজ্ঞজনেরা মসলিনের উত্তরসূরি বলে থাকেন।
জামদানির আভিজাত্য নকশায়। জিটল আর সূক্ষ্ম কারুকাজে সমৃদ্ধ এই নকশা। কারুকাজ আর নকশায় যে জামদানি চটকদার, তার কদরও তত বেশি।
কাস্টমারের চাহিদামত শাড়ি নিয়ে এসে শুরুতে কিছু শাড়ি কিনে ফেসবুক পেজে ছবি দেই। জামদানি শাড়ির প্রতি আগ্রহ থেকে অনেকে অর্ডার করেন।মানসম্মত প্রোডাক্ট বিক্রির কারণে কাস্টমারের চাহিদা বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে অর্ডারের পরিমাণও বাড়তে লাগল।
তারপর ক্যাশঅন হোম ডেলিভারি ও কুরিয়ারের মাধ্যমে কাস্টমারের কাছে শাড়ি পৌঁছে দেই আমি।
ঐনিতা’স কালেকশনের প্রতিষ্ঠাতা ঐনিতা রৌহিদা জানান, জামদানি শাড়ি কেনার আগে তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে – শাড়ির দাম, সূতার মান এবং কাজের সূক্ষ্মতা।
আসল জামদানি শাড়ি তাঁতিরা হাতে বুনন করেন বলে এগুলো তৈরি করা অনেক কষ্টসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ। তাই এগুলোর দামও অন্যান্য শাড়ির তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।
একটি জামদানি শাড়ি তৈরি করতে দুইজন কারিগর যদি প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা শ্রম দেন, তাহলে ডিজাইন ভেদে পুরো শাড়ি তৈরি হতে সাত দিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
সাধারণত শাড়ি তৈরির সময়, সূতার মান ও কাজের সূক্ষ্মতা বিবেচনায় একটি জামদানির দাম ৩,০০০ টাকা থেকে এক লাখ ২০,০০০ টাকা কিংবা তারচেয়েও বেশি হতে পারে।
কিন্তু মেশিনে বোনা শাড়িতে তেমন সময় বা শ্রম দিতে হয় না। এজন্য দামও তুলনামূলক অনেক কম।
জামদানি শাড়ি হাতে বোনা হওয়ায়, শাড়ির ডিজাইন হয় খুব সূক্ষ্ম এবং নিখুঁত। ডিজাইনগুলো হয় মসৃণ।
কারিগর প্রতিটি সুতো হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বুনন করেন। সূতার কোন অংশ বের হয়ে থাকে না। এ কারণে জামদানি শাড়ির কোনটা সামনের অংশ আর কোনটা ভেতরের অংশ, তা পার্থক্য করা বেশ কঠিন।
ঐনিতার “ঐনিতা’স কালেকশন” পেজের সিগনেচার পণ্য ঢাকাই জামদানি শাড়ি। নারায়ণগঞ্জের জামদানি পল্লি থেকে শাড়িগুলো আনা হয়। এছাড়া টাঙ্গাইল ও তাঁতের শাড়ি বিক্রি করা হয়। এগুলো সংগ্রহ করা হয় তাঁতিদের কাছ থেকে। শাড়ির জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অর্ডার আসা শুরু হয়েছে।
Leave a Reply