মিনহাজ পারভেজ পাটগ্রাম (লালমনিরহাট)
সাদা মেঘের ভেলা ভাসিয়ে শরৎ বিদায় নিয়েছে সদ্যই। হেমন্তের শিশির বিন্দুতে সাদা কাশফুলের রঙও এখন ধূসর প্রায়। শীতের আগমনী বার্তায় ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে ভোরের সোনারাঙা রোদ। বিকেল পাঁচটা না বাজতেই পশ্চিমে ঢলে পড়ছে সূর্য। গোধূলী লগ্ন পেরিয়ে জলদিই নেমে আসছে সন্ধ্যা। ভোরের আলো ফুটতেই স্নিগ্ধ শিশিরে ভেজা সবুজ ধানের পাতাগুলো নুয়ে পড়ছে বাতাসে।
সাতসকালে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় টের পাওয়া যাচ্ছে, ধীর পায়ে শীত নামছে প্রকৃতিতে। আর শুক্রবারের (৩১ অক্টোবর) শিশির ভেজা ভোর যেনো জানান দিলো ধীর পায়ে শীত আসছে। ভোরের আলো ফোটার আগেই প্রকৃতিতে আজ ভর করেছে ঘন কুয়াশা।
কার্তিকের শুরু থেকেই এমন শীতের আবহ তৈরি হয়েছে দেশের উত্তরাঞ্চলে। উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে শীত। ক্রমেই কমছে বাতাসের আর্দ্রতা আর বাড়ছে হিমেল ঠাণ্ডা পরশ। বর্তমানে দিনের বেলায় গরম ও রাতের বেলা শীত অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে ঠাণ্ডার কারণে ভোর বেলায় কাঁথা শরীরে মুড়িয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ।
লালমনিরহাটে শীতের আগমন জানান দিচ্ছে কুয়াশার উপস্থিতি। আশ্বিন মাসের প্রথম দিন থেকে এখানে কুয়াশা পড়ছে। ভোরবেলা কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে সবদিক। এ কারণে রাস্তায় চলাচলকারী মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনকে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
লালমনিরহাটের স্থানীয় বাসিন্দা জিহাদ হাসান জানান, দিনের বেলা বেশ গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাতভর বৃষ্টির মত টুপটুপ করে কুয়াশা ঝরতে থাকে। বিশেষ করে ধানের শীষে কুয়াশা বিন্দু বিন্দু জমতে দেখা যায়। সকালে যারা ঘাসের ওপর দিয়ে হাঁটাচলা করেন কুয়াশার কারণে তাদের কাপড় ভিজে যায়।
লালমনিরহাটের কৃষক মোজাহারুল ইসলাম জানান, প্রচণ্ড গরমে জনজীবন যখন কাহিল, তখনই শীত প্রশান্তির বার্তা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। আমন ধান পাকা শুরু করলেই আমরা বুঝি শীত আসছে। আমাদের মাঝে শীত আসে প্রচণ্ড গরমের উপর হিমেল শীতের পরশ হিসেবে।
আমানতুল্যা প্রধান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু কাওসার আলম পলাশ জানান , শীতকাল বলতে আমরা উৎসবের ঋতুকে বুঝি। এ সময় গ্রাম বাংলায় পিঠা পুলি আর ভাপাপিঠার আয়োজন করা হয়।
চিকিৎসক জানান, বর্তমান আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সন্ধিক্ষণে শীত ও গরম বিরাজ করছে। পাশাপাশি এ কারণে শিশুদের মাঝে দেখা দিচ্ছে সর্দি কাশি। তাই এ সময় অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে যাতে শিশুদের শীত গরম আবহাওয়া থেকে রক্ষা করা যায়।