ফেরদৌস জয়
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার ১৪ নং বিষ্ণপুর ইউনিয়নে আধিপত্যের জের ধরে আশরাফুল নামের এক কিশোরকে বাড়িতে আটক করে পৈশাচিক নির্যাতনসহ সন্ত্রাসীকায়দায় সংঘবদ্ধভাবে বাড়িঘর ভাঙচুরের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের দেয়া মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয় ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাজেদ মিয়া। এঘটনায় গতকাল বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে শান্তিপাড়া এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী।
এসময় প্রবীণ ব্যক্তি আতাউর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ ২২ বছর যাবত মাজেদ মেম্বারকে আমরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে আসছি। তার বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি মশিউর গং ও জয়নাল আবেদীন গংয়ের পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করতে গিয়ে আব্দুল মাজেদের প্রতিপক্ষ আবুল কালাম আজাদের রোষানলে পড়ে হয়রানি মূলক মিথ্যা মামলায় জেল হাজত খাটছেন ওই ইউপি মেম্বার।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া অন্যান্যদের বক্তব্য ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিগত সময়ে জয়নালকে বিশ্বাস করে তার আপন বড়ভাই মৃত তমিজ উদ্দিনের ৪ ছেলে তৈয়ব মিয়া, শফিউল, ইসমাইল ও কাতুল মিয়াদের সাথে অংশিদার হিসেবে গত
২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে পারিবারিকভাবে আজম ব্রীজ নামে ৮নং রামনাথপুর ১নং ওয়ার্ডের খোদ্দবাগবাড় মৌজায় একটি ইট ভাটা স্থাপন করে। ইট ভাটাটি পরিচালনার জন্য জয়নাল আবেদীন তার পুত্র শহিদুলের নামে অপকৌশল করে যাবতীয় কাগজপত্র তৈরী করেন। এবং শহিদুল ও তার ভাই শাহা আলম মিলে ৫ বছর যাবত ওই ভাটা পরিচালনা করে প্রায় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এদিকে মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলেরা ভাটার মালিকানা সুত্রে আয় ও ব্যয়ের হিসাব চাইলে বিভিন্ন ভাবে টালবাহানা করে উল্টো জয়নাল গং বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে।
এঘটনাকে কেন্দ্র করেই স্থানীয়ভাবে কয়েক দফায় শালিসী বৈঠক
বসানো হলেও প্রভাবশালী ওই জয়নাল আবেদীনের পরিবারের কেউ শালিসী বৈঠকে হাজির হয়না। এতে উভয় পরিবারের মধ্যে চরম বিরোধ সৃষ্টি হয়। এদিকে একই কায়দায় ইটভাটার ব্যবসা অংশীদারত্বে করতে গিয়ে জয়নাল পরিবারের কাছে প্রতারনার শিকার হয় আব্দুল মাজেদ মেম্বার। তাদের পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে জয়নাল আবেদীন গং মাজেদ মেম্বারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় মাজেদ মেম্বারের ছেলে মাহামুদুল হাসান বাদী হয়ে গত ২৫/৮/২২ইং তারিখে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জয়নাল আবেদীনের পরিবারের বিরুদ্ধে একটি সাতধারা মামলা দায়ের করেন।
এরই ফলশ্রুতিতে জয়নাল গং আরো বেপরোয়া হয়ে গত ১৩/১/২৩ইং তারিখে আরমান নামের এক কিশোরকে বাড়িতে আটক করে মারডাং করা সহ তাদের বসতবাড়ি ভাংচুর করে উল্টো মেম্বার সহ ভুক্তভোগীদের নামেই গত ১৫ই জানুয়ারি বদরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মাজেদ মেম্বার আদালতকে সম্মান জানিয়ে কোর্টে হাজির হয়ে জামিনের জন্য আবেদন করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
এবিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, উভয়পক্ষের ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে। উভয়পক্ষের মামলা এন্ট্রি করা হয়েছে। সেইসাথে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply